1. admin@dailyoporadhonusondhanltd.net : admin :
শিরোনামঃ
জয়পুরহাট পাঁচবিবির মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কর্মী ও সূধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহের ফুলপুরে জুয়ার আসর পুড়িয়ে দিলো নব যোগদানকৃতওসি রাশেদুজ্জামান: শেরপুরের নবাগত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম মহোদয়ের যোগদান ও দায়িত্বভার গ্রহণ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ফলজ বৃক্ষ উপহার পেল শিক্ষার্থীরা কোটালীপাড়ায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ফুলপুর ইসলামী ব্যাংক ম‍্যানেজারের সাথে ফুলপুর প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের আলোচনা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত। যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানাধীন মাস্টারপাড়া এলাকা হতে ০১টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও  কার্তুজ উদ্ধার। জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পেল সনদ শেরপুরে প্রতারণার ফাঁদে এক নারী জামায়াত আমিরের ‘ক্ষমা’ নিয়ে মাসুদ সাঈদীর স্ট্যাটাস

  • আপডেট সময়ঃ সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪
  • ১২০ জন দেখেছেন

জয়পুরহাটে বিজিবি সদস্যর জমি জবর দখল, সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে কবুলিয়ত মালিক

বেলাল হোসেন, উপজেলা প্রতিনিধি ক্ষেতলাল, জয়পুরহাটঃ

জয়পুরহাট, ক্ষেতলাল উপজেলার শালবন গ্রামের মৃত, আফছার আলীর বড় ছেলে আমিনুল ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)সদস্য রানা সরদার এর পৈতৃক সম্পত্তি যাহার দাগ নং ৩৭০৭ এর ধানী ১৭ শতাংশ জমির খতিয়ান নং ১৮৮ জে,এল, নং ১৪ রে: সা:নং ৩৪৮১ র কৃষ্ণনগর মৌজা। জমির মোট ১৭ শতাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ জমি খাস খতিয়ানের ০১ যার দাগ নং ১৫৮৯ এর মধ্যে ২৮ শতাংশ জমি ২৩/০৬/ ২০০৯ ইং সালে ভূমিহীন কৃষ্ণনগর মধ্যপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম সরকারের খাস খতিয়ানের মাধ্যমে কবুলিয়ত গ্রহণ করেন। তবে কবুলিয়ত জমির ২৮ শতাংশ জমির মালিকানা গ্রহণ করার পরে গত ৬ জুন ২০২৪ সালে তিনি নতুন করে জমি মেপে (বিজিবি) সদস্য রানা সরদার এর মালিকানা জমিতে প্রায় ৪ শতাংশ জমি আইল কেটে কবুলিয়ত জমির মধ্যে প্রবেশ করান।

যানা গেছে, রবিউল
২৮ শতাংশ জমি ৯৯ বছরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কবুলিয়ত গ্রহণ করেন। এদিকে উক্ত গ্রামের কয়েকজন মানুষের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, কৃষ্ণনগর মধ্যপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে কবুলিয়ত জমির মালিক হয়েছেন। যানা গেছে রবিউল এর বাড়ির সামনে সরকারি খাস খতিয়ানের মোট ৩২ শতাংশের মতো জমি রয়েছে। বাড়ির সামনের জমি হাতে নেওয়ার পায় তারাই নিজের ধানী ১৩- ১৪ শতাংশ জমি বিক্রি করেন রবিউল। এর পরে নিজেকে ভূমিহীন দাবি করে ২০০৮ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী ভূমিহীন আইনে তিনি আবেদন করেন। যা পরবর্তী ২৩/০৬/ ২০০৯ ইং খাস খতিয়ানের ০১ যার দাগ নং ১৫৮৯ এর মধ্যে ২৮ শতাংশ জমি ৯৯ বছরের জন্য কবুলিয়ত গ্রহণ করেন। তবে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবুলিয়ত গ্রহণ করা সেই রবিউল ইসলাম মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ৭ লক্ষ টাকায় একটা বাড়ি করেছেন, ধানী জমি নিজ মালিকানা সহ সন কাটনি এমন জমি প্রায় ৪-৫ বিঘা চাষাবাদ করেন।

কবুলিয়ত জমি গ্রহনের মধ্যে পরিপত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেটি জেনে বুঝে স্বাক্ষর করা হয়, এছাড়া পরিপত্রে উল্লেখিত ১৭-২২ টি অঙ্গীকার কবুলিয়ত গ্রহণ কারিকে মানতে হবে, যদি এগুলো না মেনে চলে তাহলে সরকারি আইন অমান্য করার জন্য উক্ত জমি হাত ছাড়া হয়ে যাবে।
পরিপত্রে উল্লেখ্য যে,

১। জমি অনাবাদি হলে পরিস্কার সংস্কার করে আবাদি জমিতে রুপান্তরিত করতে হবে।

২। জমির কোন মাপ পরিবর্তন বা সংসোধন করতে হলে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে হবে।
৩। উক্ত জমিতে চাষ বা ফসল ছাড়া অন্য কোন কিছু স্থাপন করা যাবেনা, তবে যদি থাকার জাইগা না থাকে তাহলে ডিসি বরাবর আবেদন করে জমির এক পাশে ঘর তুলতে পারবেন।
৪। জনগণের চলাচল সরকারি রাস্তার কাজ করতে মাটির প্রয়োজন হলে উক্ত কবুলিয়ত জমি থেকে মাটি দিতে হবে কোন বাধা প্রদান করতে পারবেন না।

৫। তৌসিলদারের উপস্থিতিতে উক্ত জমি পরিমাপ করার পরে মাটির টিলা নিশানা তৈরি করতে হবে।

এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ১৭ টি আদেশ উল্লেখ করা হয়েছে। যেটি অতিরিক্ত হলে সরকারি আমলারা ঘটনার সত্যতা পেলে কবুলিয়ত বাতিল হয়ে যাবে।

এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিউল ইসলামকে ২০০৯ সালের ২৩ শে জুন তারিখে সরকারি সার্ভেয়ার ও নিকটস্থ তৌসিলদারের উপস্থিতিতে উক্ত মৌজার ০১ নম্বর খতিয়ানের ১৫৮৯ দাগে মোট ২৮ শতাংশ জমি কবুলিয়ত রবিউল কে বুঝিয়ে দেন।

১৫ বছর গত করে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের তোয়াক্কা না করে নিজের মত করে উক্ত জমিতে আবার মাপযোগ শুরু করেন। এতে দেখা যায় পার্শ্ববর্তী অনেক মালিকানাধীন জমির ভিতরে তিনি আইল ঠেলেছেন। এতে একদিকে সরকারি আমলাদের অবজ্ঞা করার পাশাপাশি সরকারি নিয়ম কানুণ তোয়াক্কা না করা ও সেই সঙ্গে অন্যর মালিকানাধীন সম্পত্তির ভিতরে নিজেকে জাহির করা, পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের না জানিয়ে একা একা জমি মেপে অন্যার জমি দখল করা এক প্রকার জবর দখল বলে মনে করছেন সমাজের গুনিজনেরা।

এ বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী বিজিবি সদস্য রানা সরদার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি একজন রাষ্ট্রীয় কর্মচারী, আমি চাইলেও কার সাথে খারাপ আচরণ করতে পারিনা। রবিউল কেন আমার বাবার সম্পত্তি জবর দখল করবে। এ বিষয়ে রানা সরদার এর বড় ভাই আমিনুল বলেন, আমার বয়স ৫৫ বছর এ পর্যন্ত উক্ত জমি আমাদের, আজ এসে রবিউল, সরকারের জমির গরম দেখিয়ে আমার ও আমার পার্শ্ববর্তী কয়েকজন ব্যাক্তির জমি জোর করে দখল নিচ্ছেন কেন?

এ বিষয়ে গ্রামের মানুষ ও পার্শ্ববর্তী জমিত মালিকের সাথে কথা বলতে গেলে তারা সকলেই গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ঘটনা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উপস্থিত হই রবিউল এর বাড়িতে, এ সময় কবুলিয়ত রবিউল এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি কোন অপরাধ করিনি আমার যেটুকু সম্পত্তি সরকার আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে আমি সেইটুকু সম্পত্তি বের করার চেষ্টা করেছি।

আমি একজন ভূমিহীন মানুষ আমাকে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে এলাকার সকল মানুষ আমার ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমি ভালো খাচ্ছি আমি ভালোভাবে ঘুরতেছি, আল্লাহ দিয়েছে কিছু অর্থ হয়েছে এটাই তাদের বড় চোখ হয়েছে ।

এ সময় রবিউল আরো বলেন, আমি একজন ভূমিহীন মানুষ পাশে দাঁড়াবার মতো কেউ নেই, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহবান করব আপনাদের মাধ্যমে, আমার সাথে যে অন্যায় অত্যাচার হচ্ছে এগুলো থেকে যেন নিষ্কৃতি পাই।
রবিউল বলেন, এই জমিটি নেওয়ার সময় থেকে এখন পর্যন্ত আমার উপরে কয়েক দফায় মামলা করা হয়েছিল আমি কয়েক বছর মামলা চালিয়ে এই জমিটি আমার হাতে নিয়েছি। গ্রামের মানুষ আমাকে ১৪ শতাংশ জমি বিক্রি করাইছে এই জমির মামলা চালানোর জন্য। আজ আমি সরকারের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য জমিটি পেয়েছি।

এদিকে সরে জমিনে উপস্থিত হয়ে দেখা যাই, উক্ত সরকারি কবুলিয়ত জমিটি চাষাবাদের যোগ্য না করে সেখানে দুইটি মুরগির শেড তৈরি করা হয়েছে।
জমি জবর দখল বিষয়ে (বিজিবি)সদস্য রানা সরদার ক্ষেতলাল থানা বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিকেল ৪ টার সময় ক্ষেতলাল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এর দিক নির্দেশনায় ঘটনাস্থলে থানার এস,আই মতিয়ার রহমান উপস্থিত হয়ে আইনিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালেহীন তানভীর গাজী”র সঙ্গে whatsapp এ কথা বললে তিনি বলেন, বিষয় টি নিয়ে এডিসি রেভিনিউ এর সাথে কথা বলুন। আমি রাজশাহীতে মিটিংয়ে আছি সারাদিন এখানেই থাকব। এদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা: সবুর আলী”র সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি অফিসিয়াল কাজের জন্য ব্যস্ত থাকার কারণে সাংবাদিকরা সাক্ষাৎ করতে ব্যার্থ হন। এ বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর”এর সঙ্গে কথা বললে, তিনি শু পরামর্শ প্রদান করেন, তিনি বলেন এ বিষয়গুলো যেহেতু আমি দেখি না সুতরাং আপনারা উপজেলা ভূমি অফিসার এর সঙ্গে কথা বলেন।

কবুলিয়ত জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা সহকারী( ভূমি) কমিশনার জিন্নাতুল আরা”র সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, এবিষয়ে কোন অভিযোগ পায় নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

আরো দেখুন......